1. admin@daily24live.com : admin :
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৩:১৭ অপরাহ্ন

জয়পুরহাটে আলুর দাম না পেয়ে কৃষকের মাথায় হাত

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৪৭ Time View

মোঃ মোকাররম হোসাইন,জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি:

 

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা আলু উৎপাদনে দেশের বৃহত্তম উপজেলা হিসাবে পরিচিত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আলুর ফলন হয়েছে আশানুরূপ। আগের বছর ভালো দাম পাওয়ায় আলু চাষে ঝুঁকেছিলেন কৃষকরা। তবে চলতি মৌসুমে প্রত্যাশা মতো আলুর দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। আলুর দাম কম থাকায় খুচরা বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা স্বস্তি প্রকাশ করলেও চাষিরা বাধ্য হয়ে কম দামেই আলু বিক্রি করছেন।কৃষকরা বলছেন, হিমাগারেও জায়গা নেই।আলু এখন গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার ছাড়া উপায় নেই।

জয়পুরহাট জেলায় এ বছর ৪৩,৪৭০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৯ লাখ ৫৬ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু জেলায় হিমাগার রয়েছে মাত্র ১৯টি, যেগুলোর ধারণক্ষমতা এক লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন।প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু রয়ে যাচ্ছে হিমাগারের বাইরে। ফলে কৃষকরা বাধ্য হয়েছেন ঘরে, মাঠে, এমনকি বাড়ির আঙিনায় আলু সংরক্ষণ করতে। যা গরমে দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এ উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নে হাতিয়র গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দীন বলেন, ৮০বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি।ফলন ভালো হলেও বাজারে বিক্রি করলে খরচের অর্ধেকও উঠছে না। হিমাগারে জায়গা না পেয়ে ঘরে রেখেছি, কিন্তু গরমে পঁচে যাচ্ছে। এখন কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছি, না হলে সবই নষ্ট হয়ে যাবে।

কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন,এবার ৪ বিঘা জমিতে স্টিক জাতের আলু আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। বাজারে আলুর দাম কম হওয়ায় গরুর বিকল্প খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছি।

এ উপজেলার আরেক কৃষক আমিরুল ইসলাম  বলেন,১০বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। হিমাগারে অতিরিক্ত স্লিপ না পাওয়ায় আলু বাড়িতে রেখেছি। এখনো ৬বিঘা জমির আলু বিক্রি হয়নি।

উপজেলার পুনট বাজারে দেশি লাল পাকরি আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮-৯ টাকা কেজি। অথচ উৎপাদন খরচ কেজিতে ১৫-২২ টাকা। এতে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে কৃষকদের ঘাটতি গুণতে হচ্ছে।

আলু ব্যবসায়ী এনামুল সরদার বলেন,তিনি সাড়ে ৯ টাকা কেজি দরে আলু কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছেন। কিন্তু সেই দাম কৃষকের ক্ষতির মাত্রা পুষিয়ে দিতে পারছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সব গ্রামেই এখন গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে আলু। কেউ সিদ্ধ করে, কেউ কাঁচা আলুই খাওয়াচ্ছেন গরুকে। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানান, এতে গরুর স্বাস্থ্যের চরম ক্ষতি হচ্ছে।উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মনিরুজ্জামান জানান, আলু শর্করা জাতীয় খাবার। বেশি খাওয়ালে পেটফাঁপা এবং বিষক্রিয়া হতে পারে, বিশেষ করে কাঁচা আলুতে।

কৃষকরা এ বিষয়ে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করছেন। তারা বলছেন, বাজারে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ, অতিরিক্ত হিমাগার নির্মাণ এবং বিকল্প বাজার ব্যবস্থার উদ্যোগ ছাড়া কৃষকদের বাঁচানো সম্ভব নয়। তাদের আশঙ্কা, এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামীতে আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন চাষিরা।

কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, ‘গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবার কৃষকরা বেশি আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু হিমাগারে স্থান সংকট ও অতিরিক্ত উৎপাদনের কারণে সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে সরকারকে জানিয়েছি, দ্রুত সমাধানের প্রত্যাশা করছি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Daily24live.com
Theme Customized BY : Themes Seller.Com.Bd