রাজু আহমেদ, রাজবাড়ী :
রাজবাড়ী জেলা পুলিশের টানা ৩৬ ঘণ্টার অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের পাঁচজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেয় রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), যাদের সহায়তায় ছিল গাজীপুর জেলার একাধিক থানা পুলিশ।
জানা গেছে, গত ২৪ মে রাত আনুমানিক ১টা ৪৫ মিনিটে রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের চন্দনী গ্রামে ভয়াবহ একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের একটি ডাকাত দল লোহার রড, চাপাতি, বাটাম ও ধারালো অস্ত্রসহ সশস্ত্র অবস্থায় বাড়ির বাউন্ডারির তারকাটা কেটে প্রবেশ করে। পরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক গৃহকর্তাকে গুরুতর জখম করে এবং অস্ত্রের মুখে পরিবারের অন্য সদস্যদের জিম্মি করে নগদ ছয় লক্ষ টাকা ও ৫-৬ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় ডাকাতির মামলা (নং-৩৯, তারিখ ২৪/০৫/২০২৫, ধারা ৩৯৫/৩৯৭ দণ্ডবিধি) দায়ের করেন।
পরবর্তীতে ঘটনাটির তদন্তে নেমে রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম এর নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব এর তত্ত্বাবধানে এবং ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. মফিজুল ইসলাম এর নেতৃত্বে টানা ৩৬ ঘণ্টার বিশেষ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর, কালিয়াকৈর, সালনা ও চন্দ্রা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডাকাত দলের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন, গাজীপুর জেলার কাশিমপুর থানার সরদাগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং সরদাগঞ্জ পশ্চিমপাড়া কাদের সরদারের ছেলে শাহ আলম ভাঙ্গারী (৪৫), রংপুর জেলার তারাগঞ্জ থানার একরচালী ইউনিয়নের ৭নং লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত আনছার আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৬), সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী থানার খাসকাওলিয়া ইউনিয়নের ৬নং মধ্যখাসকাওলিয়া মিয়াপাড়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে নুর হোসেন (৪০), টাঙ্গাইল জেলার ভূয়াপুর উপজেলার অর্জুনা ইউপির ১নং কুঠিবয়রা গ্রামের মৃত একেন্দালীর ছেলে মামুন সরকার (৪২) ও একই উপজেলার রামাইলের চর গ্রামের মো. সাত্তারের ছেলে মো. সেলিম (৩০)।
গ্রেফতারকৃতদের নামে রাজবাড়ী, গাজীপুর, ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে: শাহ আলম ভাঙ্গারীর বিরুদ্ধে ৫টি ডাকাতি মামলা, শফিকুল ইসলামের নামে ১০টি মামলা রয়েছে যার মধ্যে ডাকাতি, চুরি, পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, মাদক ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা অন্তর্ভুক্ত, নুর হোসেনের বিরুদ্ধে রয়েছে ২টি মামলা জুয়া ও চুরির অভিযোগে। গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রটি আন্তঃজেলা পর্যায়ে সংঘবদ্ধ ডাকাতির সঙ্গে জড়িত এবং তাদের বিরুদ্ধে আরও মামলার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। রাজবাড়ী জেলা পুলিশ জানিয়েছে, জেলার নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।